গত ০২ডিসেম্বর ২০২৪তারিখ সোমবার বিকাল ৩:০০টায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আনোয়ারা বেগম-মুনিরাখান মিলনায়তনে (১০/বি,১,সেগুনবাগিচা,ঢাকা) আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে বহুমূখী কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিষয়ে অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পক্ষে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম।
মতবিনিময় সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ এর অতিরিক্ত ডিআইজি (ফরেনসিক শাখা, সিআইডি, ঢাকা) শম্পা ইয়াসমীন; মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সাবিনা ফেরদৌস; আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার সহকারী পরিচালক (সিনিয়র সহকারী জজ) ফারিন ফারজানা; জনাব সালমা সৈয়দ পলি, উপ-পুলিশ কমিশনার, উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এস এম এ সবুর, জাতীয় ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরির ল্যাবরেটরি প্রধান মো. জাবেদুল আলম খন্দকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড.মো. তৌহিদুল হক, ইউএন উইমেন, বাংলাদেশ-এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর শ্রবণা দত্ত,জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপপরিচালক সুস্মিতা পাইক, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. মো. আমিনুল ইসলাম, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও নারী অধিকারকর্মীগণ।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে,মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সাবিনা ফেরদৌস কাজের অভিজ্ঞতায় বলেন অনেক আইন থাকলেও নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ক্যাম্পেইন প্রয়োজন।নারী নির্যাতন প্রতিরোধে পুরুষদের মাঝে বড় পরিসরে প্রচারাভিযান কর্মসূচী পরিচালনা করার পাশাপাশি সম্পদ-সম্পত্তিতে সমানাধিকার ইস্যূতে সচেতনতা তৈরি করা যেতে পারে। সবার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে,প্রত্যেকের সিদ্ধান্তগ্রহণে স্বাধীনতা থাকতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।সকলের সহযোগিতায় তিনি নারীর প্রতি সহিংসতা মুক্ত সমাজ গড়ার প্রত্যাশা করেন।
বাংলাদেশ পুলিশ এর অতিরিক্ত ডিআইজি (ফরেনসিক শাখা, সিআইডি, ঢাকা) শম্পা ইয়াসমীন বলেন নারীর অধিকার রক্ষায় সংবিধান সবচেয়ে বড় দলিল। সংবিধানের ২৭, ২৮ এবং ২৯ নং অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে বলেন সংবিধানের প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখলে নারীর প্রতি বৈষম্য করার কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি নারীবান্ধব বিভিন্ন আইনের উল্লেখ করে তিনি সাইবার অপরাধ দমনে বাংলাদেশ পুলিশ কাজ করছে তিনি এসময় নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে অনলাইন পরিসেবার কথা উল্লেখ করেন।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার সহকারী পরিচালক (সিনিয়র সহকারী জজ) ফারিন ফারজানা বলেন, বর্তমানে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার ঘটনা প্রকাশের সংখ্যা খুবই নগন্য। সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে ও ঘটছে বিভিন্ন অনাকাঙ্খিত ঘটনা। পারিবারিক সহিংসতার ঘটনার উপস্থিতি জনপরিসরে ও মিডিয়াতে কম।জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা প্রতিটি জেলাতে আইনগত সহায়তা প্রদান করে চলেছে।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এস এম এ সবুর বলেন, আমাদের দেশে অনেক নারীবান্ধব আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ নেই। সম্পত্তিতে, শিক্ষায়, কাজে সকল ক্ষেত্রে নারীদের সমান অধিকার প্রয়োজন।
জাতীয় ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরির ল্যাবরেটরি প্রধান মো. জাবেদুল আলম খন্দকার বলেন,ডিএনএ টেষ্ট এর মাধ্যমে নির্ভূলভাবে প্রকৃত অপরাধীকে দ্রুত সনাক্ত করা যায়, তিনি বিচারিকপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা দূর করতে এবং নারী নির্যাতন প্রতিরোধের জন্য ডিএনএ টেষ্ট এর জন্য, ল্যাবরেটরীর সংখ্যা বৃদ্ধি করাসহ সকলের মধ্যে সচেতনতা তৈরি,্ জাতীয় ডিএনএ ডাটাবেজ তৈরি এবং গবেষণার উপর গুরুত্ব দেন।
উপপুলিশ কমিশনার সালমা সৈয়দ পলি বলেন, জেলা পর্যায়ে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের কার্যক্রম বিস্তৃত করা যেতে পারে। যৌতুক ও পরকীয়া, সাইবার অপরাধ সহ বিভিন্ন নতুন ধরণের সহিংসতার ঘটনার সুষ্ঠু বিচারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নতুন ধারা সংযুক্ত করা যেতে পারে, তৃণমূলে আইনী সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাসহ সকলকে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।
মো: তৌহিদুল হক বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সবাই সবার কাছে নিরাপদ না ততক্ষণ কেউ নিরাপদ না। সকল প্রকার পারিবারিক বৈষম্য দূর করতে নারী আন্দোলনকে কর্মসূচী চলমান রাখতে হবে, আর্থিকভাবে ক্ষমতাশীল