করোনা ভাইরাসের আগ্রাসনের যখন মৃত্যু নিশ্চিত বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানের সব আবিষ্কার ও অকার্যকর।এমন এক সময় ২০২০ সালের ২জানুয়ারি সবার নজর কাড়ে গ্লোব বায়োটেকের সংবাদ সম্মেলনে।যেখানে ভ্যাকসিন আবিষ্কার এর ঘোষণা দিয়েছিলেন ডাক্তার আসিফ মাহমুদ যার নাম দেয়া হয়েছিল বঙ্গ ভ্যাকসিন সংক্ষেপে বঙ্গভ্যাক্স।ডাক্তার আসিফ মাহমুদের সঙ্গে সেদিন আনন্দে কেঁদে ছিলো পুরো বাংলাদেশ।
যদিও পরে আর আলোর মুখ দেখেনি সে ভ্যাক্সিন।কেন দেখেনি উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশের পত্রিকা,প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়।নিজেদের পকেট ভারি করতেই আমলাতন্ত্রের লালফিতায় আটকে রাখা হয়েছিল বঙ্গভ্যাক্সের অনুমোদন।
অসাধু এই সিন্ডিকেট অন্তরালে ছিলেন দরবেশ ক্ষেত সালমান এফ রহমান।ফলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে অদ্য ডজন চিঠি দিয়েও মেলেনি কোন সহায়তা।আবিষ্কারের পর গ্লোব বায়োটেক এর সাথে জয়েন্টবেঞ্জারের বঙ্গভ্যাক্স বাজারজাতের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান।তাতে সায় দেয়নি উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠানটি।তবে এর মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপের মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনিস্টিউটশনের কারণে এক রকম চাপা পড়ে যায় বঙ্গভ্যাক্সিন।
বিষয়টি অনুসন্ধানে জানা যায় করোনা ভ্যাকসিন কে কেন্দ্র করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ সালমান,স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের গড়ে ওঠে একটি সিন্ডিকেট।যার সাথে যুক্ত ছিলেন তৎকালীন স্বাস্থ্যসচিব লোকমান হোসেন,বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ বিএমআরসির চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের আলী ও প্রধানমন্ত্রী সাবেক মূখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস।এই সিন্ডিকেটের শক্তির বলয় আটকে যায়।
বাংলাদেশে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের তথ্যমতে বাংলাদেশের করোনাভাইরাসের ভ্যাক্সিন আমদানি করে অন্তত ২২ হাজার কোটি টাকা নিজের পকেটে ভারি করতেই তারা গরিমসি করেন।দেশে আবিষ্কৃত ভ্যাক্সিনের অনুমোদনে।নথিপত্র বলছে,অক্টোবরের ১৫ তারিখ গ্লোব বায়োটেকের ভ্যাক্সিনকে কোভিট১৯ ভ্যাক্সিন তালিকা অন্তর্ভুক্ত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা W.H.O
একেই বছরের ২৮ অক্টোবর ক্লিনিক্যাল টায়েলের জন্য বঙ্গভ্যক্সকে উৎপাদনের লাইসেন্স দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।তবে তবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্স এর জন্য বিএমআরসি’তে গেলে সেখানেই শুরু হয় কাল ক্ষেপন,নানা শর্তের বেড়াজালে।
২০২১ সালের ২২ জুন বিএমআরসি থেকে চিঠি দিয়ে জানানো হয় ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বানর অথবা শিম্পাইঞ্জিতে টিকার টায়াল সম্পন্ন করতে হবে।যদিও গ্লোবাল বায়োটেকের
গবেষকরা বলছেন বানরের টায়ালের প্রয়োজন ছিল না।এ টায়াল শেষ হতে সময় লাগে আরো ৪ মাস।
২৩ নভেম্বর অনুমোদনের চিঠি হাতে পায় গ্লোব বায়োটেক ক্লিনিক্যাল টায়ালের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ২৫ নভেম্বর ঔষধ অধিদপ্তরে আবেদন করে গ্লোব বায়টেক।এর ৭ মাস পর ১৭জুলাই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে বঙ্গভ্যাক্সেকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি প্রদান করা হয়।
ততক্ষণে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায় আর বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা এনে দেশের অধিকাংশ মানুষকে ভ্যাক্সিন সম্পন্ন হয়।জানা গেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর আন্তরিক হলে ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর এর আবেদনের পরপরেই মিলতে পারতে অনুমোদন বিএমআরসি প্রায় ৫ মাস আর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর মন্ত্রনালয় মিলিয়ে ৭মাস সহ মোট ১২ মাস অযাচিত ইচ্ছাকৃত সময় নষ্ট হয়েছে।
গ্লোব বায়োটেকের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ডাক্তার মোঃমহিউদ্দিন কে বঙ্গভ্যক্স নিয়ে প্রশ্ন করলেই তার চোখ ভিজে যায়।তিনি বলেন রাগ অভিমান কষ্ট তিনি করোনার ভ্যাকসিন নেননি। তিনি আরো বলেন,ভারতের স্বাধীনতা দিবসে তাদের ভ্যাক্সিন আবিষ্কার কোম্পানিকে জাতীয় সেলুট দেওয়া হয়েছিল।সেই সেলুট তো তাড়া পেতে পারতেন।বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে যাওয়া তার বক্তব্যে নেয়া সম্ভব হয়নি অন্যদিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই আত্নগোপনে গেছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।