মোঃ তানভীর শেখঃ ঢাকা দক্ষিণ প্রতিবেদক : অভিযান একমাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এখতিয়ার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কোনো ছাত্র-জনতা কোথাও কোনো অভিযান চালাতে পারবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
গতকাল বৃহস্পতিবার ৬ ফেব্রুয়ারি ট্যুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কনফারেন্স রুমে ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রধান মোঃ মাইনুল হাসান অতিরিক্ত আইজিপি (চলতি দায়িত্ব) এর সভাপতিত্বে টুরিস্ট পুলিশের এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বাংলাদেশ টুরিস্ট পুলিশের সদর দফতরে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, যেসব স্থানে মবজাস্টিস হচ্ছে, সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনছে। কোথাও কোথাও পুলিশের ওপরেও হামলা চালানো হচ্ছে।
এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতারে তৎপর রয়েছে। জনগণ যদি উচ্ছৃঙ্খল হয়ে যায়, তাহলে কিন্তু সমস্যা হয়। বাহিনী দিয়ে তো সবসময় কন্ট্রোল করা যায় না। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে একটি বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। জনগণকে সচেতন করতে হবে। যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, সে বিষয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর আছে।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যেসব ছেলে-মেয়ে খারাপ হয়ে যায়, তাদের বাবা-মা এবং অভিভাবকেরা শাসন করে। এসব উচ্ছৃঙ্খল জনতা ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের অপকর্ম না করতে পারে, সে ব্যাপারে বাবা-মায়ের ভূমিকা পালন করতে হবে।
এবার ঈদে যাতে কোথাও চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, দেশে টুরিস্টের যেসব স্থান রয়েছে সে অনুযায়ী পুলিশের সংখ্যা অনেক কম। তাদের বাসস্থানের সংকট, তাদের পরিবহনেরও সংকট রয়েছে। মহাসড়কে রাতে ডাকাতি এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না হয়, সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উক্ত মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি সাখাওয়াত হোসাইন, মো. ইকবাল ও বাধিন ত্রিপুরা, ট্যুরিস্ট পুলিশের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া বিভাগের পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীনসহ ট্যুরিস্ট পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়াও, ট্যুরিস্ট পুলিশের সকল রিজিয়নের পুলিশ সুপারগন উক্ত মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, ২০১৩ সালের ৬ নভেম্বর “ট্যুরিস্ট পুলিশ” নামক বাংলাদেশ পুলিশের একটি বিশেষায়িত ইউনিট গঠন করা হয়। বর্তমানে ট্যুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টাস এর অধীনে ৪টি ডিভিশন, ১১টি রিজিয়ন, ৪২টি জোনে ৩২টি জেলায় মোট ১৩০ টি স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। বর্তমানে ১৩৯৪ জন অনুমোদিত জনবলের বিপরীতে ১২১০ জন ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্য ১৩০টি ট্যুরিস্ট স্পটে নিরাপত্তার পাশাপাশি পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষণে কাজ করছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করে চলেছে যা দেশের জিডিপি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশ।
মতবিনিময় সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের প্রসার ও বিকাশে ট্যুরিস্ট পুলিশের ভূমিকার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
এ ছাড়াও তিনি ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যদের অধিকতর পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ প্রদান করেন। এ সময় ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরা হয় এবং দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশে আরো জনবান্ধব এবং পেশাদার পুলিশিং করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।