শিরোনাম

বাজারে স্বস্তি ভোজ্যতেল ও লেবু ছাড়া স্থিতিশীল সব পণ্যের দাম


জীতেন বড়–য়া,খাগড়াছড়িঃ খাগড়াছড়ি রোজার বাজারে স্বস্তি বিরাজ করছে।ভোজ্যতেল ও লেবু ছাড়া সব পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। কোন কোন পণ্যের দাম গত বছরে চেয়ে কমেছে।

বিগত বছরগুলোতে রমজান শুরুর আগ থেকেই রোজায় ভোগ্যপণ্যের দাম পাইকারি ও খুচরা বাজারে বেড়ে গেলেও এবার বাজারে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র দেখা গেছে।মাছ,মাংস বেগুন ও কাঁচা মরিচের গত বছরের রোজার চেয়ে কমে বিক্রি হচ্ছে।

বেগুন কেজি ১০ টাকা আর কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে। ফলে ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে প্রশাসনও নিয়মিত মনিটর করছে।

রোজায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে খাগড়াছড়ি জেলা সদর ও ৯ উপজেলার হাট সহ খুচরা বাজারে তদারকি অভিযান পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, উপজেলা প্রশাসন,ভোক্তা অধিকারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর।

বুধবার সকালে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার এর নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

এসময় রমজানের নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা পণ্যের মধ্যে মাছ,মাংস, মুরগি, সয়াবিন তেল ও লেবুসহ বিভিন্ন পণ্যের ক্রয় ও বিক্রয়ের ভাউচার মনিটরিং করেন। যাতে অধিক মুনাফার লোভে ভোক্তার সঙ্গেম প্রতারণা না করেন সে বিষয়ে প্রথমবারের মতো ব্যবসায়ীদের সাবধান করেন জেলা প্রশাসক।

একই সময় খুচরা বাজারের দেশি ও বিদেশী ফল এবং সবজিতে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ফরমালিন আছে কিনা তা ভ্রাম্যমাণ ল্যাবের মাধ্যমে পরীক্ষা করেছে ভোক্তা অধিকার ও বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

যাতে করে রমজান মাসে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হয় সেই বিষয়ে এ পরীক্ষা কার্যক্রম চালানো হয় ।

এদিকে গত বছর বছর রোজায় খাগড়াছড়িতে গরুর মাংস বিক্রি হয়েছিল ৭৫০টাকায়। এবার বিক্রি হচ্ছে ৭শত টাকায়। খাসি গত বছরের মত করে এক হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

দেশীয় ও ব্রয়লার মোরগীও গত বছরের চেয়ে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি প্রতিকেজি ৩০০ টাকা, সোনালি ৩১০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা।

মাছের বাজারও স্থিতিশীল। গত বছর যে বেগুন কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হলেও এ বছর বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়।

কাঁচা মরিচ গত বছর কেজি ৩শ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা করে। খেজুরের দামও কমেছে গত বছরের তুলনায়।শাক-সবজির দামও গত বছরের তুলনায় কমেছে।

খাগড়াছড়ি বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ রাজা মিয়া জানান বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সঙ্কট রয়েছে। তবে, সংকট থাকলেও দাম বাড়েনি

বাজারে ছোলা, চিনি, আদা, পেঁয়াজ, রসুন, মসুর ডাল, পাম অয়েলের দাম স্থিতিশীল। তা ছাড়া বাজারে চাউলের দামও স্থিতিশীল রয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে সোয়াবিন তেল ও লেবু ছাড়া বাজার স্থিতিশীলের পাশাপাশি কিছু কিছু পণ্যের দাম কমায় খুশি ক্রেতারাও।
খাগড়াছড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি, মো: ইউনুছ জানান বাজারের ইফতার, মুদি দোকানে নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য, মাছ, মাংস ও সবজি বাজার মনিটরিং করে।

ব্যবসায়ীদের পণ্যের বাজার মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা, পাইকারি ক্রয়ের রশিদ সংরক্ষণ, তেল বা কোনো প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য মজুদ না করা ইত্যাদি বিষয় নিশ্চিত করবার জন্য ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দিচ্ছে প্রশাসন ও বাজার ব্যবসা সমিতির নেতৃবৃন্দ।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে প্রতিদিন দুটি টিম জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করা হচ্ছে।

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি আছে।

এ কারণে আপনারা দেখছেন, এখন পর্যন্ত আকাশচুম্বী কোন দাম হয়নি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়েছে, বেগুন লেবু শশা এটা প্রতি বছরই এরকম করে। তার পরেও ভোক্তা অধিকার লেগে আছে। শাক-শবজির দাম বাড়েনি বরং যা ছিল তাই আছে।”

অপর দিকে রোজায় খাগড়াছড়ি বাজারে দ্রব্যমূল্য না বাড়ায় ভোক্তা পর্যায়ে স্বস্তি বিরাজ করছে। আগামীতে স্থিতিশীল থাকবে এমনি প্রত্যাশা ভোক্তাদের।

বাজারে তদারকি অভিযান পরিচালনায় খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মোঃ আরিফিন জুয়েল,স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক ও খাগড়াছড়ি পৌর প্রশাসক নাজমুল আরা সহ কমিটির অন্যান্যরা সাথে ছিলেন ।


0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments